

০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, চট্টগ্রামঃ
পুঁজিবাজার সম্পর্কে বাস্তব ধারণা ও প্রায়োগিক পরিচালনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা গ্রহন করতে এবং তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি (ইডিইউ)-এর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রায় ৬৫ জন শিক্ষার্থীর একটি দল আজ ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই)-এর, আগ্রাবাদ, চট্রগ্রামস্থ কার্যালয়ে তাদের শিক্ষা সফর সম্পন্ন করে। বাংলাদেশ পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী এবং বিনিয়োগ শিক্ষার অংশ হিসেবে সিএসই প্রতিনিয়তই এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমন্ত্রণ ও স্বাগত জানিয়ে আসছে ।
উক্ত অনুষ্ঠানে সিএসই কর্তৃপক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনাব এম সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ, চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও),জনাব মোহাম্মদ মাহাদী হাসান, সিএফএ, ডিজিএম এন্ড হেড অফ ক্লিয়ারিং, সেটেলমেন্ট এন্ড লিস্টিং কমপ্লায়েন্স, জনাব একেএম শাহরোজ আলম, ম্যানেজার,ট্রেক কমপ্লায়েন্স, জনাব আদনান আব্দুর রাকিব । অধিবেশনটি পরিচালনা করেন হেড অফ ট্রেনিং অ্যান্ড এওয়্যারনেস, জনাব এম সাদেক আহমেদ। অনুষ্ঠানে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি (ইডিইউ)-এর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর এ কাইয়ুম চৌধুরী।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনাব এম সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ বলেন, পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে। উন্নয়নের কাজগুলো চলমান এবং আগামী দিনগুলোতে তা প্রতিফলিত হবে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমাদেরকে মাল্টিডাইমেনশনাল দক্ষতায় নিজেকে উন্নীত করতে হবে। পুঁজিবাজারের পুরো ব্যবস্থাটাকে আয়ত্বে নিতে হলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাপারগুলো সম্বন্ধে ভালোভাবে জানতে হবে এবং আপনারা যত জানবেন তত শিখবেন। এক্ষেত্রে, একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রায়োগিক শিক্ষাও জরুরী। এই পুঁজিবাজার হলো এমন একটি স্থান যেখানে ক্যাপিটালের বিনিয়োগ যেমন হয় তেমনই এই মার্কেট থেকে নতুন পুঁজি নিয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। এই ব্যবস্থায় টেকনিক্যাল এবং রেগুলেটরি কাঠামোর মাধ্যমে পুঁজিবাজার পরিচালিত হয়। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করা এবং সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) জনাব মোহাম্মদ মাহাদী হাসান, সিএফএ,তাঁর বক্তব্যে বলেন, পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগকারী এবং কর্ণধার উভয়ই হবেন আজকের শিক্ষার্থীরা । তাই শিক্ষাকালীন সময় থেকেই এই পুঁজিবাজার এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে জানা, গবেষণা করা, সম্যক জ্ঞান লাভ করা এবং সুযোগ থাকলে প্রায়োগিক জ্ঞান গ্রহণ করা প্রয়োজন । শিক্ষাজীবন শেষ করে যে পেশাতেই নিযুক্ত হন না কেন, সব ক্ষেত্রের জন্য নিজেকে উপযুক্তভাবে প্রস্তুত করাকে গুরুত্ব প্রদান করা খুব জরুরী। মনে রাখবেন জ্ঞানের সাথে যখন বাস্তবিক শিক্ষা যুক্ত হয় এবং এরপর যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় তা হয় প্রাসঙ্গিক।
ডিজিএম এন্ড হেড অফ ক্লিয়ারিং, সেটেলমেন্ট এন্ড লিস্টিং কমপ্লায়েন্স, জনাব একেএম শাহরোজ আলম, বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে পুঁজিবাজারের অবদান অনস্বীকার্য। পুঁজিবাজারে কেবল ইনভেস্টর হিশেবে অংশগ্রহণ করবেন এমন চিন্তা থেকে বের হতে হবে। এই মার্কেটে ইনভেস্টর ছাড়াও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়ার অনেকগুলো সুযোগ রয়েছে, যেমন, উদ্যোক্তা, কনসালটেন্ট, ট্রেইনার , পরিকল্পনাকারী কিংবা অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষণকারী হিসেবেও আপনি কাজ করতে পারবেন। স্বল্প সময়ে বিনিয়োগ করে অধিক লভবান হবেন এই উদ্দেশ্যকে বাদ দিয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে পুঁজিবাজারে আসতে হবে। আপানাদেরকে এমনভাবে তৈরি হতে হবে যেন যা হওয়ার কথা ছিল বা যা হয়নি সেগুলো করার উদ্যম ও প্রচেষ্টা আপানদের লক্ষ্যে থাকে। আপনাদের এবং আমাদের সবার সমন্বিত প্রয়াস এই মার্কেটের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। আজকের শিক্ষার্থীদের নিতে হবে সেই দায়িত্ব, হতে হবে আগামী দিনের সফল কর্ণধার।
ম্যানেজার,ট্রেক কমপ্লায়েন্স,জনাব আদনান আব্দুর রাকিব বলেন, আপনি যখন একজন বিনিয়োগকারী হবেন এবং ব্রোকার হাউজ থেকে সেবা গ্রহন করবেন তখন খেয়াল রাখবেন কমপ্লায়েন্স সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা। আর সে ব্যাপারে সঠিক ধারনা বা জ্ঞান না থাকলে আপনার দ্বারা নিয়মের ব্যত্যয় হয়ে যেতে পারে এবং তার ফলাফল ভালো নাও হতে পারে। তাই এখন থেকেই বিনিয়োগ শিক্ষার কমপ্লায়েন্স বিষয়ক বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে জানতে হবে । আমরা আশা করবো, আপানারা নিজেদেরকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করবেন এবং আগামীতে আমাদের পুঁজিবাজারকে সমৃদ্ধ করবেন।

প্রফেসর এ কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ফিনান্সিয়াল মার্কেটে, ক্যাপিটাল মার্কেট হচ্ছে অর্থনীতির একটি শক্তিশালী ভিত্তি । অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী এবং তাদের উদ্যোগ ও অংশগ্রহণ এই মার্কেটকে আরও প্রানবন্ত করবে । বাংলাদেশের বর্তমান পুঁজিবাজারের অবস্থানের পেছনে সিএসই সব সময়ই অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আসছে, যার সাম্প্রতিক একটি উদাহরন হল কমোডিটি এক্সচেঞ্জ-এর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ । তিনি উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন যে, নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা সামনে এই পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক আজকের এই শিক্ষা সফরই হতে পারে তাদের প্রথম পদক্ষেপ ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বর্তমানে প্রচলিত এবং অদূর ভবিষ্যতে নতুন চালুকৃত প্রোডাক্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন । এছাড়াও আর্থিক পরিকল্পনা, ঝুঁকি এবং পুঁজিবাজারের সাথে সম্পর্কিত রিটার্ন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সুরক্ষার জন্য তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন । উক্ত অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদান করতে ও প্রায়োগিক পরিচালনা বিষয়ে অবহিত করতে জনাব এম সাদেক আহমেদ তাঁর উপস্থাপনা প্রদান করেন । এরপর সিআরও এবং অন্যান্য উপস্থিত বিভাগীয় প্রধানগণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন ।এবং অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীরা সম্যক ধারণার জন্য এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন বিভাগ গুলো পরিদর্শন করেন।
©2024 Chittagong Stock Exchange PLC. All rights reserved.

02:34:01 (BST)










